ছোট বাচ্চাদের যত্ন কিভাবে নিবেন

ছোট বাচ্চাদের যত্ন কিভাবে নিবেন এই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক প্রশ্নের মধ্যে এসেছেন। এখন প্রায় সকলের বাসায় ছোট বাচ্চা থাকে তাদের যত্ন নেয়ার সঠিক পরামর্শ খুঁজে পাওয়া যায় না। 

ছোট-বাচ্চাদের-যত্ন-কিভাবে-নিবেন

তাই আপনাদের জন্য বাচ্চাদের সঠিক যত্নের অনেকগুলো পরামর্শ নিয়ে এই পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে। আশা করি পোস্টটি সম্পন্ন করলে আপনি এর সমাধান পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে আলোচনা শুরু করা যাক। 

পোস্ট সূচিপত্র : ছোট বাচ্চাদের যত্ন কিভাবে নিবেন

১. নবজাতক বাচ্চাদের যত্ন কিভাবে নিবেন

ছোট বাচ্চাদের সাধারণত ডাক্তার এক থেকে দুই মাসের মতো তেল মাখাতে না বলেন। তবে যখন থেকে তেল মাখানো শুরু করবেন প্রতিদিন অন্তত দুইবার করে শিশুদের তেল মালিশ করেন। শিশুদের তেল মাখিয়ে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করাবেন না, তেল মাখানোর অন্তত ১৫ মিনিট পর গোসল করাবেন। তেল মাখানোর আগে সব সময় একটুখানি করে গরম করে নিবেন। 

দুই হাতে তালুতে ঘোষে গরম করলেও চলবে। ছোট শিশুর ত্বক খুব কোমল হয় তাই হালকা হাতে মালিশ করবেন খুব জোরে জোরে মালিশ করবেন না। গরমকালে সরষের তেল আর শীতকালে নারকেল তেল দিয়ে মালিশ না করাই ভালো। বাচ্চার নাভি শুকিয়ে পরতে সাত থেকে দশ দিনের মতো সময় লাগে। শিশুর নাভি ঝরে পড়া না পর্যন্ত শিশুকে গোসল না করানোই ভালো। 

নাভি পড়ে যাওয়ার পর থেকে বাচ্চাকে প্রতিদিন গোসল করাবেন এবং বাচ্চার মাথা জল থেকে উপরে রাখবেন। লক্ষ্য রাখবেন শিশুটির কানে যেন কোন ভাবেই জল না ঢুকে। নবজাতক শিশুরা একটু বেশি ঘুমায় এই ভেবে যেন বাচ্চার ঘুমানোর টাইম টা একটু নজরে রাখবেন খাবার সময় টা। প্রতি এক থেকে দুই ঘন্টা পর পর শিশুকে সজাগ করে তারপর শিশুকে খাবার খাওয়াবেন। এমন ভাবেই একটি নবজাতক শিশুর যত্ন নিবেন।

২ গরমে বাচ্চাদের যত্ন কিভাবে নিবেন

আমরা বড়রা যেমন বলতে পারে বা বুঝতে পারি যে আমাদের শরীরের ঘাম হচ্ছে বা গরম লাগছে সেটা অনুভব করতে পারি। সময় মত পানি খেতে পারি। কিন্তু ছোট বাচ্চারা সেটা কখনোই পারেনা। গরমে আপনার শিশুর যত্ন খুবই জরুরী। প্রথমেই বলি যে একটি বাচ্চার গরমে কোন কষ্ট হচ্ছে কিনা কিছু লাগবে কিনা সেটি আপনাকে আগে বুঝতে শিখতে হবে। 

কারণ এ সময় কোন বাচ্চাকে তো আমরা পানি দেবো না, যেমন বড়রা পানি খাই, স্যালাইন খাই কিন্তু তারা তো শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করে। এক্ষেত্রে আপনি যদি বাইরের কোন খাবার দেন বা পানি দেন তাহলে বাচ্চার ইনফেকশন হতে পারে। সেতো আপনাকে মনে রাখতে হবে এবং বুঝতে হবে যে আপনার বাচ্চার কোনরকম কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা কষ্ট হচ্ছে কিনা। 

আপনি যদি দেখেন যে ডিমের ভেতরে কোন শিশু ৮ থেকে ১০ বার প্রসাব করছে তাহলে বুঝবেন আপনার শিশুটি একেবারে ভালো আছে সুস্থ আছে। এর পরবর্তী সময় যদি গা-হাত-পা ঠোঁট সবকিছু ড্রাই হয়ে যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন যে বাচ্চাদের সমস্যা আছে। এটা জন্য শিশুর মাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে যেন সেটি থেকে তার শিশুটি পরিমাণ মতো সবকিছু পাই।

৩. শীতকালে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন

শীতকালে বাচ্চাদের গরমের থেকে একটু আলাদাভাবে যত্ন নেওয়া দরকার। শীতকালে বাচ্চাদের গোসলের জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। শীতকালে গোসলের পর বাচ্চাদের অলিভ অয়েল তেলুয়া ভিটামিন এ সমৃদ্ধ তেল মেখে দিন। সকাল বেলা বাচ্চাদের 15 থেকে 20 মিনিট রোদ পোহাতে নিয়ে যাবেন। ত্বকের শুষ্ক জাগায় এলোভেরা জেল লাগিয়ে দিতে হবে। 

ছোট-বাচ্চাদের-যত্ন-কিভাবে-নিবেন

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও ফলের রস পান করতে দিতে হবে। শীতকালে বাচ্চার জন্য ক্ষার যুক্ত সাবান নয়, সরিষার তেল নয় বয়স অনুযায়ী সঠিক ময়েশ্চারাইজার ডেটল, সুথশ, স্যাভলন নয় নরম ও আরামদায়ক পোশাক পড়াতে হবে। হাত ও পায়ের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। লিব বাম ব্যবহার করা, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। তরল জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ানো এই সমস্ত কাজগুলো করতে হবে। 

আরো পড়ুন : কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা


শীতকালে বাচ্চাদের আলাদাভাবে যত্ন না নিলে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। গা হাত পা ড্রাই হয়ে যেতে পারে এজন্য লোশন ব্যবহার করা দরকার। জেলশনটি ব্যবহার করবেন সেটি হল বেবি লোশন। শীতকালে বাচ্চাদের ত্বকের ও বিভিন্নভাবে যত্ন নেওয়া যায়। এভাবে আপনিও আপনার শিশু যত্ন নিতে পারেন।

৪. ছোট বাচ্চাদের খাবারের তালিকা

ছোট বাচ্চাদের যত নেওয়ার পাশাপাশি তার খাবার তালিকা টাও ঠিক রাখা দরকার। আমরা অনেক সময় বাচ্চাদেরকে খাবার খাওয়াই কিন্তু জানিনা তার সঠিক নিয়ম তা বা কি খাওয়াবো এগুলো জানি না তাই আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব যে ছোট বাচ্চার খাবার কিভাবে খাওয়াবেন কখন খাওয়াবেন কি খাবার খাওয়াবেন সেগুলো সম্পর্কে। 

গর্ভাবস্থায় থাকার পরে তার থেকেও কিন্তু বেশি বাচ্চা হওয়ার পরে তার খাদ্য চাহিদাটা দ্বিগুণ থাকে, পুষ্টি দ্বিগুণ প্রয়োজন। প্রথম ছয় মাস যেহেতু একটি বাচ্চা বুকে দুধে পান করে থাকে। তখন বাচ্চা থেকে মায়ের খাবারটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ থাকে। কারণ মায়ের থেকে একটি বাচ্চা সম্পূর্ণরূপে তার খাবারগুলো গ্রহণ করে থাকে। 

তারপরে ছয় মাসের বয়স পার হয়ে গেলে তখন থেকে সুজি, সেরেলাক্স, এ সমস্ত খাবারগুলো আস্তে আস্তে খাওয়াতে শুরু করে এবং সাথে একটু একটু করে ভাত ও পানি খাওয়ানো শুরু করতে থাকে। এভাবে একটি ছোট বাচ্চা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এভাবে খাওয়াতে থাকলে আপনার বাচ্চা পুষ্টিগুলো অবশ্যই তার পরিপূর্ণরূপে শরীরে গ্রহণ করতে পারবে। এভাবে তাহলে আপনার বাচ্চা অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এভাবে আপনি আপনার ছোট বাচ্চাকে খাবার খাওয়াতে পারেন।

৫. বাচ্চাদের দাঁতের যত্ন

বাচ্চাদের শরীরের যত্ন পোশাকের যত্ন ত্বকের যত্নের পাশাপাশি দাঁতের যত নেয়াটাও খুব প্রয়োজন। শিশুদের তাতে যত্ন অবশ্যই শিশুর মায়ের গর্ভ থাকা অবস্থায় থেকে মাকে সচেতন থাকতে হবে। কেননা শিশুরা যখন মায়েদের গর্ভে থাকে তখন থেকে তার দাঁত তৈরিটা শুরু হয়। সুতরাং একজন গর্ভবতী মা যদি তার খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর খাবার গুলো দিতে পারেন । 

তাহলে তখন কিন্তু শিশুর শারীরিক ও মানসিক ঘোটছে ঠিক তেমনি তার দাঁতের গঠন সুন্দর হচ্ছে। কারণ এই দাঁতের গঠন যদি কোন কারনে খারাপ হয় তখন শিশু কিন্তু দন্তক্ষয় রোগের মতো মারাত্মক রোগে আসতে পারে। সুতরাং গর্ভবতী মাকে আগে সচেতন হতে হবে। এছাড়া একটি বাচ্চার দাঁতের যত্নে তাকে প্রতিদিন নিয়মিত ব্রাশ করতে হবে। 

বাইরের কোন জিনিস খাওয়া চলবে না যেমন চকলেট, ডেইরি মিল, ইত্যাদি এ ধরনের খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা। তাহলে বাচ্চাদের দাঁত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বাচ্চাদের দাঁতের যত্নে আপনি এ সকল কাজগুলো করতে পারেন। বাচ্চাদের দাঁতের যত্নে আপনাকে সব সময় সচেতন থাকতে হবে।

লেখকের মন্তব্য 

ছোট বাচ্চাদের যত্ন কিভাবে নিবেন সম্পর্কে আপনাদের সাথে এই পোস্টে সকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর এই পোস্টটি পড়ে পেয়ে গেছেন। সকল প্রকার তথ্যভিত্তিক পোস্ট পেতে অল টপিক আইটিতে নিয়মিত ভিজিট করবেন। অল টপিক আইটি নির্ভুল এবং সঠিক তথ্য দিয়ে থাকে ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।

comment url