কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা হলুদ ঔষধি গুন। কাঁচা হলুদ ও মধু একসাথে খাওয়ার ফলে অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

কাঁচা-হলুদ-ও-মধু-খাওয়ার-উপকারিতা

হলুদ ও মধুর আলাদা আলাদা গুণ ও রয়েছে। সেই সকল বিষয়ে আপনাদের সাথে আজকে আলোচনা করবো। সম্পূর্ণ পোস্টটি পরলে বুঝতে পারবেন কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা। 

পোস্ট সূচিপত্র : কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা হলুদ এর গুণ সবার জানা। কিন্তু মধু দিয়ে খেলে এর উপকারিতা আরো বেড়ে যায়। কাঁচা হলুদের গুণাবলী সম্পর্কে অনেকেই অবহিত। আয়ুর্বেদেও হলুদের উপকারিতা উল্লেখ রয়েছে। যেকোনো রকমের ইনফেকশন হলে কাঁচা হলুদের জুড়ি মেলা ভার। ত্বকের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, পেশির সমস্যা, কেটে যাওয়া বা ছুড়ে যাওয়ার জন্যও হলুদ উপকারি। 

এছাড়া হলুদের মধ্যে এমন উপাদান থাকে যার ফলে গ্যাস্ট্রিক, পেপটিক এবং গ্যাস্ট্রিক আলসার ইত্যাদির জন্য উপকারি। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিকিৎসকরা প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কাঁচা হলুদ হওয়ার একটি বর্ণনা করেছেন। ১ টেবিল চামচ কাঁচা হলুদ গুঁড়ো এবং ১০০ গ্রাম মধু নিন। 

এরপর দুটোকে ভালো করে মিশিয়ে নিন। প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে। ফ্লু, জ্বর, সর্দি, কাশি হলে এই মিশ্রন এক ঘন্টা অন্তর অন্তর খান। দ্বিতীয় দিন দুই ঘন্টা অন্তর খান। রোজ অন্তত দুইবার হলুদ মধু খেলে উল্লেখিত রোগ গুলো থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে এই মিশ্রণ এন্টিবায়োটিক এর কাজ করে।

সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা হলুদের গুনাগুন সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই জানি। শরীরের সমস্যা, ত্বকের সমস্যা, পেটের সমস্যা সবকিছুতেই সমানভাবে কাজ করে হলুদ। আমাদের মধ্যে অনেকেই সকালে কাঁচা হলুদ বা কাঁচা হলুদের সাথে মধু দিয়ে খেয়ে থাকে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি? 

কাঁচা-হলুদ-ও-মধু-খাওয়ার-উপকারিতা

হলুদকে ভারতীয় জাফরান বা সোনার মসলা বলা হয়। প্রায় আড়াই হাজার বছর ধরে হলুদের ব্যবহার হয়ে চলেছে। কাঁচা হলুদ খেলে লিভার পরিশুদ্ধ করে, আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেকোনো ধরনের লিভারের সমস্যা সমাধান দিয়ে থাকে। হলুদের মধ্যে থাকা কারকেউমিন উপাদানটি লিভারের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। 

এছাড়াও হলুদের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো লিভারের মধ্যে জমে থাকা টক্সিন গুলোকে বের করতে সাহায্য করে। ফলের লিভারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো কাঁচা হলুদ। 

আরো পড়ুন : আধুনিক রূপচর্চা বিষয়ক টিপস


বেষণার দেখা গিয়েছে প্রতিদিন যারা সকালবেলা খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেয়ে থাকে তাদের দেহের ভেতরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে যার প্রভাবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন এর মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ চলে আসে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে হলুদ। কোলন, পেট ও ত্বকের ক্যান্সারের মতো রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হলুদ। 

এর মধ্যে থাকা প্রতিরোধকারক উপাদান গুলো ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম করতে পারে এবং ক্যান্সারের ২০ তারিখে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা দৈনিক খাতা হলুদ খায় তাদের বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। কাঁচা হলুদের মধ্যে থাকা এন্টি ওবেসিটি উপাদান গুলো শরীরে বাড়তি মেদ জমতে দেয় না এবং দেহে মেটাবলিজেমের হার বাড়িয়ে দেয়। 

যার ফলে শরীরে বাড়তি মেদ জমার সম্ভাবনা কমে যায়। হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষা প্রদান করে হলুদ। সারা বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় ৩১ শতাংশ মানুষ হৃদরোগে মারা যায়। হলুদে থাকা কারকিউমিন হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে স্টকের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।

কাঁচা হলুদ খেলে কি কি ক্ষতি হয়

কাঁচা হলুদ খাওয়া যেমন ভালো তার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। আজকে আপনাদেরকে জানাবো কাঁচা হলুদ খেলে কি কি ক্ষতি হয়। গর্ভবতী মায়ের জন্য এবং যারা শিশুকে দুধ পান করায় তাদের জন্য হলুদ নিরাপদ নয়। তাই যাদের বাচ্চা আছে এবং গর্ভবতী তাদের কাঁচা হলুদ না খাওয়াই ভালো। যাদের গলব্লাডারের সমস্যা আছে তারা হলুদ খেলে গলব্লাডারের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। 

আবার যাদেরকে নিয়ে সমস্যা আছে তাদের হলুদ না খাওয়াই ভালো। হলুদে ভালো পরিমাণে অক্সালেট থাকে যা ক্যালসিয়ামের সাথে সংযুক্ত হয়ে কিডনির স্তন গঠন করতে পারে। যাদের ব্লিডিং রিজার্ভার্ড আছে বা সার্জারি করাবেন তাদের হলুদ না খাওয়াই ঠিক। হলুদের সাইট্রিক অ্যাক্টিভ এর ফলে লাড্ড ব্লাডিং স্লো হয়ে যেতে পারে। 

যাদের ব্লাড সুগার লেভেল খুব কম তাদের রান্না ছাড়া হলুদ না খাওয়াই ভালো। কারণ ব্লাড সুগার লেভেল আরো কমিয়ে দিতে পারে এই কাঁচা হলুদ। হলুদ খাওয়ার সময় হলুদের সাইডে এফেক্ট খেয়াল রাখবেন। কাঁচা হলুদ খেলে এই সমস্ত ক্ষতিগুলো আপনার হতে পারে।

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। কাঁচা হলুদ খেলে যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তাদের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। যারা রক্ত পাতলা হওয়ার ওষুধ খান তারা কাঁচা হলুদ খেলে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। কোনভাবে রক্তপাত শুরু হলে তার পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। কাঁচা হলুদ রক্ত আয়রনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। 

এই সকল কারণে জন্য কাঁচা হলুদ না খাওয়াই ভালো। ডায়াবেটিসের রোগীরা ব্লাড প্রেসার কমানোর জন্য যে ওষুধ খান তারা ভুলেও কাঁচা হলুদ কখনো খাবেন না। মধুর তেমন কোন ক্ষতিকর দিক নেই তবে অতিরিক্ত মধু খেলে গায়ের ভেতর অস্থিরতা বা জালা ভাব হতে পারে। সুতরাং মধু পরিমিত খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত মধু খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এ সকল কারণে জন্য কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। আপনার যদি এমন কোন সমস্যা থাকে তাহলে আপনি কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার নিয়ম

এক চিমটি হলুদের অনেক গুণ রয়েছে। সেটি যদি মধুর সাথে খান তার আরো অনেক উপকার পাবেন। কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার নিয়ম সাধারণত চার চামচ মধুর সাথে এক টুকরো কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেয়ে ফেলবেন। এভাবে প্রতিদিন খেতে পারলে আপনার অনেক উপকার মিলবে। খাওয়ার অনেক উপকারিতা হয়েছে। মধু হলে আপনার ওজন দ্রুত কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। 

কাঁচা-হলুদ-ও-মধু-খাওয়ার-নিয়ম

বুদ্ধি বাড়াতে ভালো কাজ করে। রক্ত ও রক্তনালী পরিষ্কার করে, রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে। শরীরে ব্যথা দূর করে, দুর্বলতা দূর করতে পারে। দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, তারণ্য ধরে রাখতে পারে। নিয়ম মেনে কাঁচা হলুদ ও মধু খাবেন। নিয়মের বাইরে খেলে এর ফলে আপনার অনেক ধরনের ক্ষতি হতে পারে। অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যতটুকু পারবেন সকালে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যদি কাঁচা হলুদ যদি না খেতে পারেন তাহলে থেঁতো করে মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

কাঁচা হলুদ খাওয়া কি কিডনির জন্য ভালো

হলুদ আপনার সমস্ত রোগকে ভালো করে। আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে আপনি হলুদ খাওয়া শুরু করুন আপনার ব্লাড প্রেসার হয়েছে সেটা তো কোন প্রবলেম নেই। আপনি সকাল বিকাল দুই বেলায় কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। আপনারা অনেকে জেনে থাকবেন যে পালং শাকের প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট আছে। যেটি আমাদের কিডনি স্টল তৈরি করে। 

পালং শাকের থেকে কাঁচা হলুদে আমাদের শরীরে আরো প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট তৈরি করে। অক্সালেট আমাদের কত বড় ক্ষতি করে সেটি আপনারা অনেকেই জানেন। গবেষণায় দেখা গেছে অক্সালেট বেস্ট ক্যান্সার, জয়েন্ট পেইন, কিডনি স্টোন সহ নানা ধরনের ক্ষতি করে থাকে। অনেকেরই হলুদ ইনডাইরেক্টস হয়ে গ্যাসের মত সমস্যার সৃষ্টি হয়। 

হলুদ আপনি যেভাবে খান না কেন হলুদের অক্সালেট কখনোই কমে না বা নষ্ট হয় না। কাঁচা হলুদের অনেক উপকারিতা রয়েছে কিন্তু কাঁচা হলুদ বেশি খেলে কিডনির অনেক ধরনের সমস্যা হয়। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধির বাসা বাঁধে। এ থেকে বোঝা গেল যে কাঁচা হলুদ খাওয়া কিডনির জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।

লেখকের মন্তব্য

কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের সাথে অনেক কথা বললাম। কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন কিছু অপকারিতাও রয়েছে সেই সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। হলুদ অনেক ওষুধের গুণ। হলুদের কাজ অনেক বেশি। মধু আমাদের অনেক কাজে লেগে থাকে। তাই নিয়মিত নিয়ম মেনে কাঁচা হলুদ ও মধু খেতে পারেন। আশা করি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন। এমন আরো নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।

comment url