সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিনের রুটিন

সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিনের রুটিন খুঁজছেন, কিন্তু কোনভাবে সেটি খুঁজে পাচ্ছেন না। বা কিভাবে কি করবেন সেটা বুঝতে পারছেন না। তাহলে আপনি আজকে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। এ পোস্টের মাধ্যমে আপনাকে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি সকল বিষয়ে তথ্য পেয়ে যাবেন। 

সুন্দর-ত্বকের-জন্য-প্রতিদিনের-রুটিন

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো সেটা কিভাবে গজ যত্ন নিবেন ঘরোয়া উপায় কিভাবে যত্ন নিবেন সেই সকল বিষয়ে। এছাড়াও আরো অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক। সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিন কি কি করতে হবে এবং প্রতিদিনের রুটিনে কোন গুলো থাকা জরুরী।

পোস্ট সূচিপত্র : সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিনের রুটিন

১. সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিনের রুটিন

আমাদের দেশে সুন্দর ত্বক বলতে আমরা কেন জানি বুঝি ফর্সা একটা স্কিন। সুন্দর বলতে কি আসলেও ফর্সা বোঝায়। সেই বিষয়ে আপনাদের সাথে এখন আলোচনা করবো। সুন্দর বলতে আসলে কি বোঝায় একটা ফর্সা স্কিনকে কিন্তু আমরা সুন্দর বলতে পারি না। ফর্সা স্ক্রিনে অনেক ধরনের প্রবলেম থাকতে পারে। আমরা সুন্দর বলতে সেই স্কিনটাকেই বুঝি যেই স্কিন টা কিনা প্রবলেম ফ্রি বা নেয়ার ফ্রি। 

ছোট ছোট সমস্যা তো সব স্কিনে থাকে। একটা সুন্দর স্কিন বলতে আমরা ননপিগমেনটেন্ট এবং ফ্রেশ একটা স্কিনকে বুঝি সেটা ফর্সা হতে পারে কালো হতে পারে বা শ্যামলা হতে পারে। মুখ কিন্তু আমাদের সবার খুব পছন্দের একটা অঙ্গ। সেজন্য মুখের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। সকালবেলা আপনি ঘুম থেকে উঠলেন উঠে একটি ফেসওয়াশ দিয়ে মুখটাকে ক্লিন করে নিলেন। 

তারপরে মুখে একটি মশ্চারাইজার ব্যবহার করলেন। তারপরে আপনি বাইরে বের হয়ে গেলেন। তারপরে দুপুরবেলা বাসায় ফিরে আবারো মুখটাকে ভালোভাবে ক্লিন করে নিলেন। এবং সন্ধ্যায় বা বিকেলে বাইরে যাওয়ার সময় মুখে একটা মশ্চারাইজার ব্যবহার করলেন। এবং কি রাতে ঘরে ফিরে মুখটাকে ভালোভাবে ক্লিনজার করে নিয়ে তারপরে ঘুমাতে যাবেন। এভাবে প্রতিদিন মুখে যত্ন নিলে আপনার ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

২. সুন্দর ত্বকের জন্য সকালের রুটিন

সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিনের রুটিনের ভেতরে সকালে রুটিন অত্যন্ত জরুরী। ত্বক সুন্দর রাখতে সকালে যে অভ্যাস গড়ে তুলবেন সে ক্ষেত্রে কোন অর্থ বা সময় ব্যয় করতে হবে না। বরং সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললে ত্বক স্বাভাবিকভাবে সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। আর এই চর্চাটা শুরু করতে হবে একদম সকাল থেকে। আজকে জানাবো ত্বক সুন্দর রাখতে যে সকল অভ্যাস গড়ে তুলবেন। 

ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পরিষ্কার পানি পান করুন তার সাথে যোগ করুন এক অর্ধেক লেবু আর একটুখানি মধু। এই পানে দেহের টক্সিন ও সমস্ত বিশুদ্ধ পদার্থ দূর করবে। এবং সাথে দেহের আদ্রতা বজায় রাখবে। এবং ত্বককে একদম গভীর থেকে পরিষ্কার করবে। প্রতিদিন সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করার ফলে শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হয় ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ গুলো বেরিয়ে যায়। সাথে সাথে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। 

ফলে ত্বক হয়ে ওঠে ভেতর থেকে উজ্জল। ঘুম থেকে উঠে ফেসওয়াশের মাধ্যমে মুখের বাড়তি তেল বা ময়লাগুলো পরিষ্কার করে নিতে হবে। সপ্তাহে এক বা দুই দিন প্রাকৃতিক স্কাপ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন চালের গুড়া, কফি ইত্যাদি। ত্বক পরিষ্কার করার পরে সারাদিনের জন্য একটি টোনার বা জেল ত্বকে ব্যবহার করুন। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা যেকোনো সময় ত্বক সুন্দর রাখা অত্যন্ত জরুরি। আপনার ত্বক সুন্দর রাখতে অসুন্দর ত্বকের জন্য সকালের এই রুটিন গুলো রাখতে পারেন।

৩. তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিবেন কিভাবে

সুন্দর ত্বক পেতে হলে তৈলাক্ত ত্বক দূর করতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অবশ্যই আলাদাভাবে যত্ন নিতে হবে। তৈলাক ত্বকে লোমকূপ বড় হয়ে যায়। তেল জমে সেসব বন্ধ হয়ে ব্রণের সৃষ্টি হয়। তাই গরমে প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে তৈলাক্ত ত্বক রক্ষা করতে হলে প্রতিদিন ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। বাড়িতে বসেই ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন। শসার রস তৈলাক্ত দূর করতে খুবই কার্যকর।

সুন্দর-ত্বকের-জন্য-প্রতিদিনের-রুটিন

প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শসার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। এছাড়া স্কাইপ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে এর সঙ্গে চালের গুড়া মিশিয়ে নিলেই হবে। যাদের মধুতে এলার্জি নেই তারা সামান্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। সপ্তাহে দুই দিন এই প্যাকটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বক পরিষ্কার হবে। ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর হবে। এতে করে আপনার তোলাক্ত ত্বক খুব তাড়াতাড়ি তৈলাক্ত থেকে মুক্তি পাবে। এগুলো ব্যবহারের ফলে মুখের জমে থাকা যে ভেতরের তেল গুলো রয়েছে সেগুলো বাইরে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে। এবং তার সাথে সেগুলোর নিষ্ক্রিয় করতে পারবে। তাই আপনিও চাইলে সেটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

৪. ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন

সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিনের রুটিনের ভেতর থাকা দরকার ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন সেটি। সেটি ঘরে বসে তৈরি করতে পারবেন আপনিও। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিবেন। প্রথমে একটি বাটিতে সামান্য পরিমাণ একটু হলুদ তার সাথে নিতে হবে হাফ চামচ নারিকেল তেল। 

হলুদ মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, হলুদ অ্যান্টিসেকটিভ হচ্ছে এর মধ্যে আন্টি ব্যাকটেরিয়াল পোপাসিত রয়েছে একনি, পিম্পল্স, ব্রণ এই সমস্ত হওয়া তো আটকায়। হলুদ উজ্জ্বলতা অনেক তার সাথে সাথে হলুদ খুব সুন্দর স্কাবের কাজও করে। এটা খুব সাহায্য করে স্কিনে গ্লো আনতে। নারিকেল তেল এবং তার সাথে চার থেকে পাঁচ ফোটার মতন লেবুর রস। 

আরো পড়ুন : ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা


লেবুর রস ব্লিচের কাজ করবে, লেবুর রস স্কিন থেকে কালো দাগ, রোদে পোড়া ত্বক দূর করবে এবং স্কিনটাকে ফর্সা করে তুলবে। এরপর এই তিনটা জিনিসকে ভালো করে মিক্স করে নিলেই রেডি হয়ে যাবে স্কাব প্লাস ক্লেনজার। কারণ নারকেল তেল ক্লিনজিনের কাজ করবে। এই ফেসিয়ালটা চাইলে রাতেও করতে পারেন এবং দিনেও করতে পারেন। সুন্দর ত্বকের জন্য এই ফেসিয়ালটি করা অত্যন্ত জরুরি। আপনি চাইলে এটি করে দেখতে পারেন।

৫. শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

সুন্দর ত্বকের জন্য শীতে কি যত্ন নিবেন তার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো। শীতকালে বাতাসের আদ্রতা অন্যান্য ঋতুর তুলনায় অনেকটা কম হয়। ফলে শীতের শুরু থেকেই ত্বক শুষ্ক হতে শুরু করে। এই শুষ্ক ঋতুতে ত্বক আদ্রতা হারিয়ে হয়ে পড়ে নিস্তেজ ও মলিন। তবে একটু সচেতনতা ও যত্নের মাধ্যমে খুব সহজেই শীতকালে ত্বক স্বাস্থ্যকর রাখা সম্ভব। তাহলে চলুন এবার শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নি।

কুসুম গরম পানিতে গোসল 

অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানির ব্যবহার শীতে ত্বককে আরও রুক্ষ করে দেয়। তাই হালকা গরম পানিতে গোসল করতে হবে। এছাড়া অতিরিক্ত ক্ষারপ্রাপ্ত সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে গ্লিসারিনযুক্ত সাবান ব্যবহার করা উত্তম।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার 

শীতের শুষ্কতার হাত থেকে ত্বক বাঁচাতে মশ্চারাইজারের তুলনা নেই। তোকে হেলদি রাখতে নিয়মিত মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। বাজারে নামিদামি ময়েশ্চারাইজার ছাড়াও খাটেরারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহারে অনেকটা ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। 

ফেসপ্যাক 

সপ্তাহে দুই-তিনবার দুধের সর, মধু ও বেসনের মিশ্রণ ব্যবহারে ত্বকের আদ্রতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করবে। তাছাড়া টক দই বেসন ও হলুদের মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে। 

স্ক্রাব বা এক্সফোলিয়েটিং 

ত্বকের মৃত কোষ বা মরা চামড়া আস্তরণ দূর করতে সপ্তাহে এক থেকে দুই বার জেন্টাল স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে। চালের গুঁড়ো আর মধু মিশিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে স্কাব তৈরি করা সম্ভব। অবশ্যই স্ক্রাবিং এরপর মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিনের রুটিন সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আমি যেভাবে বললাম বা বুঝালাম সেভাবে যদি আপনি কাজ করেন বা করতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন। আমরা হয়তো অনেকে জানিনা শীতে কিভাবে যত্ন নিবে সারাদিন কি কি করা লাগে। তাই তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি করেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি অবশ্যই উপকৃত হবেন। এমন আরও পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।

comment url