তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার গুলো জেনে নিন

তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার গুলো জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি আজকের এই পোস্টটি সম্পন্ন করতে থাকুন। এ পোস্টটি পড়লে জানতে পারবেন তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার গুলো কি কিভাবে সেটি বৃদ্ধি পাচ্ছে? 

তথ্য-প্রযুক্তির-অপব্যবহার

তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব কঠিন কাজগুলো কিভাবে সহজ করে দিচ্ছে সে সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেয়া যাক কত প্রযুক্তির অপব্যবহার গুলো কি?

পোস্ট সূচিপত্র : তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার গুলো জেনে নিন

তথ্য প্রযুক্তি কি

তথ্য প্রযুক্তি হলো যে প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, এর সত্যতা ও বৈধতা যাচাই সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, আধুনিকীকরণ ও ব্যবস্থাপনা করা হয় তাকে তথ্যপ্রযুক্তি বা ইনফরমেশন টেকনোলজি বলা হয়। তথ্য প্রযুক্তি এমন একটি জিনিস যার মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন তথ্য পেয়ে থাকি। প্রযুক্তির মাধ্যমে আজ দেশ অনেকটা উন্নতির দিকে চলে যাচ্ছে। 

প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা অনেক ধরনের তথ্য পেয়ে থাকি। তথ্য প্রযুক্তি আমাদের বেঁচে থাকার এক অন্যতম কারণ। তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া যেন মানুষ এক মিনিটও থাকতে পারে না কোন খবর বা কোন কিছু এর কাছ থেকে ওর কাছে পাঠানোর জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করি আমরা। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেয়ে থাকি। 

এই সকল তথ্যগুলোকে পেতে এবং খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে কোন ঝুঁকি ছাড়া আমাদের নিজের কাছে পেতে আমরা প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি আরো অনেক ধরনের কাজে সহায়তা করে থাকে।

প্রযুক্তির অপব্যবহার গুলো কি

পৃথিবীর আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিপুল সম্ভাবনার দার করাচ্ছে আমাদের সামনে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি আমাদের শেষ পর্যন্ত কোন দিগন্তে নিয়ে যাবে সেটা ধারণার অতীত। এক পা দু পা করে আমরা সভ্যতার প্রতিটি স্তর পার হয়ে যাচ্ছি। প্রযুক্তি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। আবার আমাদের কাছ থেকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ কেড়ে নিয়েছে। 

সভ্যতার উন্নয়নের তথ্য প্রযুক্তির অবদান অতুলনীয়। কিন্তু আমরা কি কখনো অনুধাবন করে দেখেছি। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের দিকগুলো আমাদের অবস্থান কোথায় নামিয়ে দিচ্ছে। অবশ্যই এর জন্য আবিষ্কার ও আবিষ্কারক কোনটাই অপরাধী নয়। অপরাধী হচ্ছি আমরা ব্যবহারকারীরা। বর্তমানে পৃথিবীর ৪২.২ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত। 

বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০১৫ সালের আগস্ট এ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৮ লক্ষ। ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। প্রতি ১২ সেকেন্ডে একটি করে ফেসবুক একাউন্ট খোলা হচ্ছে। যেটা বাংলাদেশের জন্ম হড়ের চেয়েও বেশি। কিছু অপ্রাপ্তবয়স্ক ও জ্ঞানহীন মানুষের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি। 

আরো পড়ুন : ৫ টি প্রযুক্তির নাম ও ব্যবহার


অপরাধের একটা বড় অংশ এইসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়। মানুষের আবেগ ও অনুভূতিতে আঘাত হানার মাধ্যমিক হিসেবে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে আমাদের সামাজিক যোগাযোগ সাইড গুলোকে। তথ্য ভিত্তিতে সমাজের কোন মানুষকে প্রতিপন্ন করা। ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের ছবি চুরি করে ব্ল্যাকমেইল করার মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। 

অপরাধী চক্র তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড সংগঠিত করার জন্যই ইন্টারনেটকে গোপনীয় মাধ্যমিক হিসেবে বেছে নেয়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সহজে নিজের পরিচয় গোপন রাখতে পারে বলে কাউকে হুমকি দেওয়া ভুয়া সম্পর্কে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মত অথবা প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য ব্যক্তিগত অন্তরঙ্গ ঘটতে দৃশ্য ধারণ করে। বিভিন্ন অনলাইন সাইডে ছড়িয়ে দেওয়া এইসব কাজ অনায়াসে সম্ভব হয় এইসব সাইটগুলো থেকে। তথ্যপ্রযুক্তিকে আমরা চাইলে সঠিকভাবে সঠিক জায়গায় ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু না করে আমরা তার অপব্যবহার করে থাকি।

প্রযুক্তির অপব্যবহারে ক্ষতিকর প্রভাব

প্রযুক্তি বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে মানুষের জীবনকে নিরাপদ, উন্নত ও আরামদায়ক করেছে। প্রযুক্তি আবার নানা রকম সমস্যাও সৃষ্টি করছে।

তথ্য-প্রযুক্তির-অপব্যবহার

পরিবেশ দূষণ 

বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে আমরা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করি এর ফলে বায়ু ও দূষিত হয়। বায়ু দূষণ বৈশাখ উষ্ণায়ন ও এসিড বৃষ্টির মত পরিবেশের উপর বিভিন্ন ক্ষতিকার প্রভাব সৃষ্টি করছে। রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক অধিক খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে। এগুলো ব্যবহারের ফলে আবার মাটি ও পানি দূষিত হয় যা জীবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

অস্ত্র তৈরি 

আধুনিক প্রযুক্তি সবচাইতে ভয়াবহ প্রয়োগ হলো যুদ্ধের অস্ত্র তৈরী ও এর ব্যবহার। যেমন বন্দুক, বোমা, ট্যাংক ইত্যাদি।

অন্যান্য ক্ষতিকর দিক 

অনেক সময় প্রযুক্তির ব্যবহার নেশায় পরিণত হয়। টেলিভিশন ও কম্পিউটারের ব্যবহার যদি ভালো কাজে নিয়োজিত না হয়, তাহলে আমাদের সময়ের অপচয় ঘটায়। নিয়মিত খেলাধুলার, ব্যায়াম ও মুক্তচিন্তার পথে প্রযুক্তি বাধা সৃষ্টি করে। একটানা ২ ঘণ্টার বেশি টেলিভিশন দেখা বা কম্পিউটার ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এই সকল কারণে প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের ওপরে পড়ছে। সে বিষয়ে আমাদের সবার সতর্ক থাকা উচিত।

তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে করণীয়

মানুষের জ্ঞান এবং কৌশলের সমন্বিত রূপেই প্রযুক্তি। ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবনের প্রতি মুহূর্তে স্মার্টফোন থেকে শুরু করে কম্পিউটার সর্বোচ্চ কম্পিউটারে ব্যবহার। প্রতিনিয়তই পরিণত হচ্ছে এই তথ্যপ্রযুক্তি গুলো। প্রযুক্ত ব্যবহার মানুষের রক্ত রক্ত মিশে গেছে এটি ছাড়া একদিন অতিবাহিত হয় না আমাদের। 

গবেষণায় উঠে এসেছে বর্তমানে সাথে অন্তত 64 জন প্রতিদিন গড়ে ৪ ঘন্টা করে কোনো না কোনো প্রযুক্তিতে সময় ব্যয় করে চলেছে। প্রযুক্তির এই অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে। আমরা এটিকে আমাদের নানাবিধ ক্ষতির কারণ হিসেবে পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে খারাপ সাইটগুলোতে ঢুকে সেগুলো বন্ধ করা দরকার। 

তথ্যপ্রযুক্তি গুলো ভালো কাজে ব্যবহার করা উচিত। মোবাইলে গেম বাজে কোন নেশাতে আসক্ত হলে সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। সময় থাকতে আমাদের পর দেখাও উচিত। কারো সাথে ভিডিও কলে কথা বলা বা নিজের গোপনীয়তা বজায় রাখা এগুলো বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার এর ফলে আমরা ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছি। তথ্য প্রযুক্তি অপব্যবহার না করে আমরা সেটিকে কাজে লাগিয়ে উপকার হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।

প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা

প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা : বর্তমানে আশেপাশে আপনি যেদিকে তাকান না কেন চারিদিকে প্রযুক্তির ব্যবহার দেখতে পাবেন। প্রযুক্তির অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে। সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো: 

তথ্য-প্রযুক্তির-অপব্যবহার

১. প্রযুক্তি যেকোনো কাজকে অনেক সহজ করে দেয় এবং আমাদের অনেক সময় বাঁচায়।

২. প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আমাদের জীবনকে আরো আরামদায়ক করে তোলে।

৩. প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা যে কোন জায়গা থেকে তথ্য এক্সেস করতে পারি।

৪. প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা ঘরে বসে অফিস বা কোম্পানির অনেক কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে করতে পারি। 

৫. চিকিৎসা ক্ষেত্রে যেকোনো জটিল রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে বড় বড় অপারেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। 

প্রযুক্তি ব্যবহারে অসুবিধা :

১. প্রযুক্তির কারণে আমাদের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয় স্বাস্থ্যর। প্রযুক্তির কারণে অনেকেই মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়।

২. প্রযুক্তির কারণে কম সময় অনেক কাজ করা সম্ভব এটি সত্য, কিন্তু এর জন্য অনেক মানুষও অলস হয়ে পড়ছে। 

৩. অনেকে অতিরিক্ত দিনরাত কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে, এর ফলে মানবদেহে ত্বক এবং চোখের ক্ষতি হয়।

৪. বর্তমানে প্রযুক্তির কারণে ভুল তথ্য ও ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। 

৫. অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার ফলে ভবিষ্যতে মানুষের চাকরি হারানো এবং বেকারত্ব হওয়ার অনেক চান্স রয়েছে।

তথ্য প্রযুক্তি অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে কারা

তথ্য প্রযুক্তি অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে কিশোর কিশোরীরা। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার এর ফলে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে অশ্লীলতা, অনলাইন গেম, ড্রাগ নেওয়ার ফলে জঙ্গিবাদ, মাদকের ব্যবসা, ধর্ষন, হত্যা, আত্মহত্যা, ফটোগ্রাফির প্রতি আসক্ত বাড়ছে। তথ্যপ্রযুক্তির কারণে একটি থেকে দশটি অপরাধ আছে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সকল বিষয়গুলো মানুষ ভালোভাবে জানতে পারছে এবং এর কাজগুলো বেশি বেশি করে করছে। একজনের থেকে আরেকজন আরেকজনের থেকে আরেকজন এক থেকে দশ জন এসব অপরাধগুলো করে চলেছে প্রতিনিয়ত। এই সকল কাছ থেকে বিরত থাকতে হলে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার না করে ভালো কাজে ব্যবহার করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তি অপব্যবহারের কারণে কিশোর কিশোরীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাঁরাই বেশি তথ্য প্রযুক্তি অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে।

লেখকের মন্তব্য

তথ্য ও প্রযুক্তির অপব্যবহার গুলো কি কি সে সম্পর্কে আপনাদের সাথে অনেক কথা বললাম। প্রযুক্তি যেমন আমাদের ভালো কাজে সাহায্য করে তেমন আমাদের ধ্বংসের দিকেও নিয়ে যায়। প্রযুক্তির মাধ্যমে সারাদেশের খবর জানা যায়। খুব কঠিন কাজগুলো খুব সহজে করা যায়। প্রযুক্তি অপব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা সেই সকল সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আজকের এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন। এমন আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।

comment url