বিভিন্ন প্রকার শাক সবজির উপকারিতা
বিভিন্ন প্রকার শাক সবজির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন প্রকার শাক সবজির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করবো। সম্পূর্ণ পোস্টটিতে
পড়লে বুঝতে পারবেন কোন কোন সবজিতে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক শাকসবজির উপকারিতা গুলো।
পোস্ট সূচিপত্র : বিভিন্ন প্রকার শাক সবজির উপকারিতা
বিভিন্ন প্রকার শাক সবজির উপকারিতা
শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল আছে। শরীরের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন ও মিনারেল। প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় শাকসবজি রাখতে হবে। যাদের বাত ব্যথা, ইউরিক এসিডজনিত সমস্যা বা কিডনির সমস্যা আছে তাদের শাক খাওয়া যাবে না। তার ভেতরে পুই শাক আর পালং শাক না খাওয়াই ভালো। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
আরো পড়ুন : ফলমূল খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন
বিভিন্ন প্রকার শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন। যেটি শরীরে অনেক কাজ করে থাকে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। শাকে রয়েছে অনেক পুষ্টিতে ভরপুর। সবজিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি যা দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়াও রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম যা দেহের পুষ্টি সাধন করে। শাকে বিভিন্ন ভিটামিন আছে। যা চোখের জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করে।
কলমি শাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
কলমি শাকে অনেক ধরনের পুষ্টি রয়েছে। কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় কলমি শাক। কলমি শাক এশিয়ার প্রায় সব দেশেই জনপ্রিয়। সবুজ এ শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পাওয়া যায়। কলমি শাকে খুব সামান্য পরিমাণে ক্যালরি থাকে। এটি ফাইবারের দারুন উৎস। নিয়মিত এই শাক খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো যায়।
কলমি থেকে উপস্থিত ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে দারুন কার্যকরি। এটি হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত কলমি শাক খেলে হৃদরোগ জনিত জটিলতা ও স্টকের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা ফাইবার অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমায়। শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে কলমি শাক। এতে থাকা আইরন থাইরয়েড এর কার্যকারিতা ঠিক থাকে।
এবং লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্ন করতেও কলমি শাকের জুড়ি নেই। কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। নিয়মিত এ শাক খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়। চোখে সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কলমি শাক।
ফুলকপির পুষ্টিগুণ উপকারিতা
ফুলকপির পুষ্টিগুণ ও অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। ফুলকপি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর শাকসবজি গুলোর মধ্যে একটি। ফুলকপিতে পানি থাকে ৮৫%, অল্প পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন থাকে। ফুলকপিতে সালফানের যৌগ সালফোরাফেন থাকে যা ব্লাড প্রেসার এর উন্নতিতে সাহায্য করে। ফুলকপিতে থাকা সালফোরাফেন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কুষ্ঠু ধ্বংস করতে পারে এবং টিউমারের বৃদ্ধিকে বাধা দেয়।
ফুলকপির সাথে হলুদ যোগ করে গ্রহণ করলে প্রোস্টেট ক্যান্সার নিরাময় ও প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়া পাকস্থলী, স্তন ও ডিম্বাশয় ক্যান্সার প্রতিরোধে ও সাহায্য করে ফুলকপি। ফুলকপি মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটায়। এছাড়াও ফুসফুসকে রক্ষা করে থাকে। ডায়াবেটিসের কারণে রক্তনালীর যে ক্ষতি হয় ফুলকপি তা প্রতিরোধে সহায়তা করে। ফুলকপির শরীরকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করে। ফুলকপি রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
লাল শাকের ৯ টি উপকারিতা
লাল শাক আমাদের অনেক উপকার দিয়ে থাকে। তার মধ্যে অসাধারণ উপকারিতা গুলো হলো:
১. লাল শাক হজম শক্তি বাড়ায় ও প্রচুর পরিমাণে আজ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
করে।
২. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে প্রতিদিন খাবারে লাল শাক রাখতে
পারেন।
৩. কিডনির ফাংশন ভালো রাখতে ও কিডনি পরিষ্কার রাখতে লাল শাক
খুবই উপকারী।
৪. লাল শাকের পুষ্টি উপাদান গুলো চোখের নার্ভ গুলোকে
শক্তিশালী করে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
৫. লাল শাক চুলের গোড়া মজবুত
করে এবং চুলের মিনারেল ও পুষ্টি যোগায়। পাশাপাশি চুলকে ধূসর বর্ণ হওয়া থেকে
রক্ষা করে।
৬. লাল শাকে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড় মজবুত ও হাড় ক্ষয় রোগ থেকে
বাঁচায়।
৭. লাল শাকে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মরণব্যাধি ক্যান্সার প্রতিরোধ
করে।
৮. লাল শাক রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা
করে ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
৯. নিয়মিত লাল শাক খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ে।
পুই শাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
পুইশাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অনেক রয়েছে। পুঁইশাক দুই ধরনের হয়ে থাকে সবুজ ও লাল। পুইশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন। তবে ভিটামিন বি, সি ও এ এর পরিমাণই বেশি। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ আছে ক্যালসিয়াম এবং আয়রন। প্রতি 100 গ্রাম পুই শাকে আছে, ২.৩ গ্রাম খনিজ পদার্থ। শর্করা আছে ৪.২ গ্রাম, লৌহ ১১ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬৫ মিলিগ্রাম। পুইশাক বেশ পুষ্টিকর ও সুস্বাদ।
দেশজুড়ে পুইশাক এ রয়েছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। বজ্র পদার্থের মাধ্যমে শরীরের রোগ জীবাণু দেহের বাহিরে যায়। পুই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। দেহের বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে বাহিরে যেতে সাহায্য করে। ত্বকের রোগ জীবাণু দূর করে। বৃদ্ধি ও বর্ধনে সাহায্য করে। চুলের পুষ্টি যোগানো ও চুলকে মজবুত রাখে। এছাড়াও পুই শাক অনেক উপকারিতা দিয়ে থাকে।
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা
পুষ্টিগণের ভরপুর সবজি গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মিষ্টি কুমড়া। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে শরীরের পাশাপাশি ভালো থাকে ত্বক, চুল। মিষ্টি কুমড়া খেলে বারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে হজমে সহায়ক সবজিটি। নিয়মিত এটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকা যায়। মিষ্টি কুমড়ায় এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি বেশ কিছু মারাত্মক রোগ যেমন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে।
মিষ্টি কুমড়াই থাকা ভিটামিন ত্বকের যত্নে অনন্য। নিয়মিত এই সবজি খেলে ত্বক থাকে কোমল ও মসৃণ। ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় মিষ্টি কুমড়া থেকে। এই উপাদান স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রন মিলে মিষ্টি কুমড়া থেকে। এসব উপাদান শরীরের শক্তি ও পুষ্টি যোগায়।
পটলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
পটলে অনেক উপকারিতা রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ ও সি আছে। এছাড়া এতে স্বল্প পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, তামা, পটাশিয়াম, গন্ধক ও ক্লোরিন আছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ঠান্ডা, জ্বর ও গলা ব্যথা কমাতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় পটল। পটলে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর। কাজেই পটল ত্বকের জন্য ও খুব উপকারী।
পটলে ভরপুর পরিমাণে ডায়েট্টিফাইবার পাওয়া যায় যা পচন তন্ত্র ঠিক রাখতে সহায়তা করে। পটলে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১ ও বি ২ আর সি এছাড়া ক্যালসিয়াময়ে ভরপুর থাকে যা ক্যালরির মাত্রা কম করে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। পটলের ভালো পরিমাণে ফাইবার থাকে যা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টইনাল সমস্যা সমাধান সাহায্য করে। পটল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পটল পেটের কৃমি দূর করতে সাহায্য করে।
ঢেঁড়সের উপকারিতা
ঢেঁড়স আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকে। ঢেঁড়সের কিছু কিছু গুণ রয়েছে যা শরীরকে অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে। ঢেঁড়সে রয়েছে সলিউবল ফাইবার পেকটিন যা রক্তের বাজে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ঢেঁড়সের মধ্যে রয়েছে অনেক ওষুধী গুন।
এর মধ্যে রয়েছে আঁশ, ভিটামিন এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে। ঢেঁড়স কোলস্টেরল কমায়। ঢেঁড়স ত্বকের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। শরীরের টিস্যু পূর্ণ গঠনে ও ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। ঢেঁড়স চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে।
এতে খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। এবং শুষ্ক মাথার ত্বকের জন্য উপকারী। ঢেঁড়স দৃষ্টি ভালো রাখে। ঢেঁড়সে আছে বেটা কেরোটিন ভিটামিন এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিউটিন যা চোখের গ্লুকোমা চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।
comment url