ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার
ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি এবং তার প্রতিকার করবেন কিভাবে সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আলোচনা করব ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।
আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো। সম্পূর্ণ পোস্টটি করতে থাকুন। তাহলে সকল বিষয়ে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার কি?
পোস্ট সূচিপত্র : ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার
ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি
ক্যান্সারের অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে। এক একটা অঙ্গের ক্যান্সার একেক রকম হয়। বিভিন্ন রকম ভাবে লক্ষণগুলো প্রকাশিত হয়। যেমন একটি হচ্ছে শরীরের ওজন কমে যাওয়া। কোন কারনে আপনার দেখছেন যে আপনার শরীরের ওজন কমে গেছে তাহলে বুঝবেন এটি ক্যান্সারের লক্ষণ। শরীরের কোন স্থানে কোনোরকম চাকার উদ্ভব। যেটা আগে আপনার শরীরে ছিল না।
এছাড়াও শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। কোন কারনে যদি শরীরের হিমোগ্লোবিন কমে যায় তখন জানতে হবে ক্যান্সার হয়েছে কিনা। পায়খানার রাস্তায় রক্তক্ষরণ। তবে অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে এটা ক্যান্সারের একটা লক্ষণ হতে পারে। যদি কোনো কারণে খাবারের রুচি কমে যায় সে ক্ষেত্রে সন্দেহ করতে হবে যে এর পেছনে ক্যান্সার আছে কিনা। অন্য অনেক কারণে ও খাবার রুচি কমে যেতে পারে।
কোন কারনে আপনি দেখছেন আপনার খাবার রুচি কমে যাচ্ছে সেক্ষেত্রে খেয়াল করতে হবে যে এটা কোন ক্যান্সারের লক্ষণ কি না। দীর্ঘদিন ধরে যারা গ্যাস্ট্রিকের ভুগছেন এবং তাদের সেই সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে দেখা গেল। তার ওজন কমে যাচ্ছে খাদ দেওয়া রুচি সেক্ষেত্রে পাকস্থলী ক্যান্সার হলো কিনা। জন্ডিস ভালো না হওয়া। এবং জন্ডিস টা বেড়েই চলেছে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে ক্যান্সার হয়েছে কিনা। এই সকল বিষয়গুলো ক্যান্সারের লক্ষণ।
ক্যান্সারের প্রকারভেদ
শরীরে যতগুলো অঙ্গ রয়েছে সেগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হতে পারে। এবং প্রত্যেকটির উপসর্গ আলাদা। শুধুমাত্র লিভারে ৫০ রকমের বেশি ক্যান্সার হয়।
১. মুখের ক্যানসার : মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ হলো মুখে ঘা, দাঁত পড়ে যাওয়া, দাঁত তোলার পরে মুখ থেকে রক্তপাত ইত্যাদি।
২. পাকস্থলী ক্যান্সার : পাকস্থলী ক্যান্সারে অধিকাংশ সময় দেখা যায় রোগীর অ্যানিমিয়া, খিদে না হওয়া, পেটে ব্যথা, এবং তিন চার দিন আগের খাবার ও বমির সঙ্গে উঠে আসে।
৩. কোলন ক্যান্সার : এই ক্যান্সারের লক্ষণ সাধারণত পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হওয়া।
৪. ফুসফুসে ক্যান্সার
৫. থাইরয়েড ক্যান্সার
৬. লিভার ক্যান্সার
৭. কিডনি ক্যান্সার
৮. স্তন ক্যান্সার
৯. শ্বাসযন্ত্র থোরাসিক ক্যান্সার
১০. গলার ক্যান্সার
এই ক্যান্সার গুলো সাধারণত হয়ে থাকে। এ ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ক্যান্সার রয়েছে।
ক্যান্সারের উপসর্গ কেমন হয়
ক্যান্সারে উপসর্গটা দুইভাবে আসে। একটা হল যে কোথায় তার শুরু সেখানে। আর অন্যটি হচ্ছে যখন এটা ছড়িয়ে পড়ে। আমরা দুটো নিয়ে দেখি যে গাড়ি একটা গোটা হলো বা ব্রেস্টে একটা গোটা হলো বা চাঁকা হলো তাহলে প্রথমেই কোন লক্ষ্যই বোঝা যাবে না। একদম প্রথম সময়ে কোন ব্যাথা যন্ত্রণা কিছুই থাকেনা। এবং এটাই ক্যান্সারের জন্য সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়।
যদি ব্যথা থাকতো তাহলে সেই রোগী কোন না কোন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করত বোঝার চেষ্টা করত যে কি হয়েছে। ব্যথা বিহীন একটা চাকা এটা হচ্ছে একটা ভয়ের ব্যাপার যেটা সবাই একটু ইগনোর করে। তারা ভাবে যে পরবর্তী সময় হয়তো ঠিক হয়ে যাবে বা দেখা যাক কি হয়। এই করতে করতে যখন সেটি অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যায় সেটি ব্যাপক সমস্যা নিয়ে আসতে পারে।
আরো পড়ুন : প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটার উপকারিতা জানুন
যদি ব্রেস্ট ক্যান্সার হয় সেটি সাধারণত আমরা দেখি যে ফুসফুসের ছড়িয়ে যায় হাড়ে ছড়িয়ে যায় ব্রেনে ছড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে দেখা যাবে যে এটা অনেক রকম ধারণ করতে পারে ঘা হতে পারে চামড়াগুলো ফুটে ফুটে হয়ে যেতে পারে কমলা লেবুর খোসার মতো হয়ে যেতে পারে বগলে গোটা চলে আসে কিছুদিন পরে।
এরকম ভাবে ক্যান্সার গুলো ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এটি ফুসফুসের ছড়িয়ে গেলে তখন হবে কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত। যদি লিভারে ছড়িয়ে যায় তাহলে সেখানে জন্ডিস হতে পারে। খাবারের হজমের অসুবিধা দেখা দিতে পারে। এরকম বিভিন্ন রকমের লক্ষণ নিয়ে আসতে পারে।
জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ
জরায়ু ক্যান্সারের অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে। জরায়ু ক্যান্সার বেশিরভাগই বয়স্ক মহিলাদের হয়। ৪০ বছরের বেশি মানুষের। মাসিক বন্ধ হওয়ার পরে পুনরায় রক্তপাত। ইয়াং বয়সে হলে দেখা গেল তাদের একটু বেশি রক্ত যাচ্ছে মাসিকের সময়। অথবা দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময় তাদের ব্লেডিং হচ্ছে। এছাড়া পেটে চাকা হতে পারে। তলপেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা এ ধরনের সমস্যা থাকতে পারে। আর বলা হয় যে ৫% ক্ষেত্রে কোন সমস্যাই থাকেনা। তারপরে অনেক কিছু টেস্টের মাধ্যমে এই ক্যান্সারটি বোঝা যায়।
ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ
ব্লাড ক্যান্সার হলে কি কি লক্ষণ দেখা যায় সেই সম্পর্কে আজকে এই পোস্টে আলোচনা করবো। ব্লাড ক্যান্সার হলে সাধারণত রক্ত স্বল্পতা, রক্তে ঘন ঘন সংক্রান্ত সমস্যা এগুলো হয়ে থাকে। সাধারণ ভাবে ব্লাড ক্যান্সার বলতে আমরা তিন ধরনের ক্যান্সারকে বুঝি। তার মধ্যে হচ্ছে লিউকেনিয়া, লিউফোমা এবং মাইলোমা। ব্লাড ক্যান্সার হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
ব্লাড ক্যান্সারের যে চিকিৎসা সেটা করা হয় সাধারণত কেমোথেরাপি এবং বন মেরু ট্রান্সলেট এর সাহায্যে। এবং এই দুই ধরনের চিকিৎসা আমাদের দেশে এখন প্রচলিত এবং আমরা সব ধরনের বনমেরু ট্রান্সলেট এবং সব ধরনের কেমোথেরাপি দেয়ার মধ্যে আমাদের দেশে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রচলিত আছে। এই চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন ধরনের জিনিসের মাধ্যমে ব্লাড ক্যান্সার এখন ভালো করে সম্ভব হয়।
লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ
লিভার ক্যান্সারের অনেক রকম লক্ষণ থাকতে পারে। লিভার ক্যান্সার একটি অত্যন্ত মারাত্মক রোগ। যেমন পেটের ডান পাশে ব্যথা , পেটে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়া, মাজা ব্যাথা ইত্যাদির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আগে দেখতে হবে লিভার ড্যামেজ আছে কিনা লিভারে কোন দাগ আছে কিনা। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
পরামর্শ করে টেস্টের মাধ্যমে জানতে হবে আপনার লিভারে ক্যান্সার হয়েছে কিনা। টেস্টের মাধ্যমে যদি ধরা পড়ে আপনার লিভারের ক্যান্সার হয়েছে। তাহলে আপনি বোঝেনা থেকে অতি শীঘ্রই তার চিকিৎসা শুরু করে দিন। কারণ যতদিন যাবে তত বাড়তেই থাকবে। চেষ্টা করবেন যত দ্রুত সমস্যাটি সমাধান করার।
ক্যান্সার প্রতিকারের উপায়
ক্যান্সার প্রতিকারের উপায় রয়েছে। সারা বিশ্বের মানুষ যে মারা যায় তার ভেতর দ্বিতীয়ত ক্যান্সারের কারণে মারা যায়। যদি কোনো কারণে আপনি দেখেন আপনার শরীরের অস্বাভাবিকভাবে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তাহলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন। উনি আপনাকে দেখে পরীক্ষা করে বলে দিবে আপনার কি ক্যান্সার হয়েছে। এবং তার জন্য আপনাকে কি করতে হবে? টেস্ট করতে হবে। প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে দিবে তা খেতে হবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয়ত হচ্ছে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এক্সারসাইজ করতে হবে। স্বার্থপর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। মধ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে। ধূমপান বর্জন করতে হবে। এগুলো করলে অবশ্যই আপনি কি ক্যান্সারের প্রতিকার করতে পারবেন খুব সহজে। আমার এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি অবশ্যই বুঝতে পারলেন ক্যান্সারের ঝুঁকি কিভাবে কমাবেন।
লেখকের মন্তব্য
ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনাদের সাথে অনেক কথা বললাম। সকল বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করেছি। যেসব আলোচনা গুলো করলাম সেগুলো হলে বুঝতে পারবেন আপনার ক্যান্সার হয়েছে। ক্যান্সার প্রতিরোধেরও যে করণীয় গুলো আছে সেগুলো করতে হবে। আশা করি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন। এমন আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত ভিজিট করবেন।
অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।
comment url