শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন।শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার অনেক উপায় রয়েছে। ছেলেকে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে অবশ্যই সেগুলো মেনে চলতে হবে।
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা অত্যন্ত জরুরি সাথে মানসিক সুস্থতাও বজায় রাখতে হবে। কিভাবে শারীরিক ও মানুষের ভাবে সুস্থ থাকবেন সেই সম্পর্কে আজকের এই পোস্টে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় গুলো।
পোস্ট সূচিপত্র : শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার অনেক উপায় রয়েছে। প্রতিদিন নিয়ম করে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস। বদল আনবে আপনার জীবনযাত্রার নিয়মিত আট ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যান এবং একই সময় উঠুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে অন্তত আধাঘন্টা হাঁটতে হবে। বসার ক্ষেত্রে সব সময় অবশ্যই সোজা হয়ে বসতে হবে। চেয়ারে কখনোই বাকা হয়ে বসা যাবে না।
খাবার খাওয়ার সময় সে খাবারগুলো ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। এতে করে পাচন ক্রিয়া ঠিক থাকা এবং হজম শক্তিতে সাহায্য করে। মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কারণ এসব খাদ্যগুলো শরীরকে মোটা করে। প্রতিদিন অন্তত আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করুন। বাইরে কোথাও যেতে হলে সাথে নিন পানির বোতল। চিনি ত্বক বা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। চিনি থেকে দূরে থাকুন।
সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ব্যায়াম করতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য বেশি করে সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে। ফল ও শাকসবজি এবং মাছ সমৃদ্ধ খাবার আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং বিভিন্ন ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করবে। নিয়মিত হাত ধোয়া সারা বছর আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। এ সকল কাজগুলো ঠিক মতো করলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারবেন।
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সকালের খাবার
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে খাবার খাওয়াটাও প্রয়োজন। যে খাবারগুলো সকালে খেলে আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে সেগুলোই খাওয়া উচিত। সকালে ঘুম থেকে উঠে দুই থেকে তিন গ্লাস পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়, রক্তের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। বমি ভাব, মাথা ব্যথা, গলায় সমস্যা, কিডনি সমস্যা ইফতারের অসুখ কমাতে সহায়তা করে।
কাঠবাদাম ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর। পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এর পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে 8 থেকে 10 টা ভেজানো কাঠবাদাম খাবেন সারাদিন সুস্থ থাকতে পারবেন। শরীরে দুর্বলতা আসবেনা। উচ্চমাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার কাঁচা ছোলা। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে খেলে শরীরের শক্তি যোগায়। রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, রক্তে চর্বি কমায়, হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়।
আরো পড়ুন : আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
দিনের শুরুতে সেদ্ধ ডিম বা অমলেট খেলে সারাদিনের কাজে পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। এবং বেশ ভালো পরিমানের ক্যালোরি গ্রহণ করা যায়। স্বাস্থ্য অনুযায়ী প্রতিদিন সকালে এক কাপ আমলকির জুস খেলে দীর্ঘায়ু হওয়া যায়। যকৃত সমস্যা, পেট ব্যথার সমস্যা, হজমে সমস্যা এবং সর্দি কাশি ভালো হয় আমলকির রস খেলে। এছাড়া আমলকি জুস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
রাতের বেলা এক থেকে দেড়শ গ্রাম কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে শুধু পানিটুকু হালকা গরম করে খাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিদ্রা দূর হবে। প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ মধু খেলে ঠান্ডা, কফ, কাশি সব কিছু দূর হয়ে যাবে। সকালে খেজুর খাওয়া যেতে পারে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনেও ফাইবার বা আঁশ থাকে। যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজম প্রক্রিয়া সহজ করে, হৃদপিন্ডের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়, ঘাড় মজবুত করে, শরীরের সোডিয়াম পটাশিয়াম এর সমর্থন রক্ষা করে। এভাবে নিয়মিত খেতে থাকলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা যাবে।
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে ব্যায়াম
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়াম শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। যোগ বা ইয়োগা অত্যান্ত প্রাচিনী একটি ব্যায়াম। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় যোগ ব্যায়াম। এটি মূলত শরীর ও মনের নিয়ন্ত্রণ রাখতে ইয়োগা বা যোগাসনের কোন বিকল্প নেই। যোগ ব্যায়াম করলে শরীরে পাই শক্তি।
ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটা ঔষধ। প্রতিদিন সকালে উঠে বা বিকেল বেলা নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ব্যায়াম শরীরকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। শরীর ফিটনেস রাখতে সাহায্য করে। ব্যায়াম করলে শরীরের হাড় গুলো ভালো থাকে। ব্যায়াম করেও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা যায়। তাই সবার উচিত শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই ব্যায়াম করা।
মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়
মানসিকভাবে সুস্থ থাকার অনেক উপায় রয়েছে। মানুষের অসুস্থ থাকার জন্য ঘুম অত্যন্ত জরুরি। যাদের ভালো ঘুম হয় না তাদের চিন্তা-ভাবনা, হতাশা, মানসিক চাপ ইত্যাদি মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে সূর্য লোকের সরাসরি আর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এজন্য প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট রোদে থাকুন।
সেটা যদি হয় ভোর ছয়টা থেকে সকাল ৯ টার ভিতরে তাহলে আরো ভালো হয়। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট পর আর অভ্যাস আপনার মস্তিষ্ককে সচল সহায়তা করে। তাই প্রতিদিন ৩০ মিনিট কোন খবরের কাগজ বা গল্পের বই পড়তে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। মানুষের সাথে মিশে থাকার চেষ্টা করতে হবে। নিজেকে সব সময় ভালো রাখতে হবে তবেই না মন মস্তিষ্ক ভালো থাকবে।
কোনরকম দুশ্চিন্তা করা যাবে না। এছাড়াও পুষ্টিকর খাবার ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিজের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সুষম পুষ্টিকর খাবার শুধু শরীরকেই নয় আমাদের মনকেও ভালো রাখে। শখের কাজ করা। নিজের শখের কাজ গুলো করতে পারলে মন ভালো থাকে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাই। নিজে দুর্বলতা গুলো মেনে নিয়ে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে।
প্রিয়জনদের সাথে বা বন্ধু-বান্ধবের সাথে কিছুটা সময় কাটানো। তাদের সাথে থাকলে আপনার মন অবশ্যই ভালো থাকবে। নিজেকে একা একা রাখলে দুশ্চিন্তা, টেনশন এগুলো সব বাড়তে থাকে তাই যতটা পারবেন মানুষের সাথে থাকার চেষ্টা করবেন। দীর্ঘদিন ধরে যদি কারো প্রতি কোনো রাগ ক্ষোভ থাকে তাহলে চেষ্টা করবেন সেগুলো ক্ষমা করার। রাগ থাকলে কখনোই মন ভাল থাকে না বা মস্তিষ্ক ভালো থাকে না। এই সকল কাজ গুলো করতে পারলে আপনি মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারবেন।
মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে খাবার
মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য খাবার খাওয়া প্রয়োজন। সেই খাবারগুলো সাধারণত অবশ্যই সুষম খাবার হতে হবে। আপনার খাবারে পুষ্টির যে ছয়টি উপাদান রয়েছে সেগুলো থাকতে হবে। সাধারণত ভাবে দানা জাতীয় খাবার গুলো খেতে পারেন। সে গুলো মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে। এবং স্মৃতিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করবে। খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বলতে ভিটামিন এ, সি, ই এগুলোকে বোঝানো হয়। এছাড়াও আরো রয়েছে। আপনি যদি খাদ্য তালিকায় এইসব খাবারগুলো যোগ করতে পারেন সেগুলো আপনার স্মৃতিশক্তিকে মজবুত করতে সাহায্য করবে। বা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাক-সবজি থেকে এ ধরনের ভিটামিন গুলো পেয়ে যাই পাশাপাশি কিন্তু টক ফল ও এর উৎস হিসেবে পরিচিত।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বাদাম খেতে পারেন। খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার। মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি নামক এসিডটি। পাশাপাশি আপনি ডিম খেতে পারেন। ডিমের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় যেগুলো আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে খাবারগুলো বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে।
লেখকের মন্তব্য
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন।শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার অনেক উপায় রয়েছে। সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে আপনাদের সাথে অনেক কথা বললাম। সবকিছু নিয়ম মেনে চললে এবং করলে আপনি তার ফল ঠিকই পাবেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে অবশ্যই পুষ্টিযুক্ত খাবার খেতে হবে ব্যায়াম করতে হবে সবকিছু করা প্রয়োজন। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য করণীয় কি সেগুলো বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন। এমন আরও পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।
অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।
comment url