ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আলোচনা করবো ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা বিষয়ে।
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে জানতে পারবেন মোবাইল ফোন আমাদের কিভাবে উপকার করে এবং ক্ষতি করে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা কি ?পোস্ট সূচিপত্র : ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও উপকারিতা
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উপকারের চেয়ে বেশি হচ্ছে অপকার। এর অন্যতম কারণ মোবাইল ফোনের খারাপ দিকের ব্যবহার। আর এই জন্য মোবাইল ফোন দায়ী নয়। দায়ী হলো শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনে পড়াশোনা বিষয়ক প্রোগ্রাম থাকা সত্ত্বেও সেগুলো না দেখে তাঁর পরিবর্তে ছবি, নাটক, গান - বাজনা, কৌতুক ইত্যাদি দেখছে।
আরো পড়ুন : ছেলেদের চুলের যত্নে ১০ টি সহজ উপায়
অনেকে আবার অনলাইনে টাকা ইনকাম করা যায় এই ধরনের তথ্য পেয়ে নিজেরা ইনকামের চেষ্টা করছে। অনেকের সফল হচ্ছে অনেকে ব্যর্থ হচ্ছে। আর টাকার লোভে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা ছেড়ে অনলাইনে ইনকাম করছে। কেউবা মোবাইল ফোনে গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। তারা পড়াশোনা বাদে মোবাইলে গেম খেলছে।
অনেকে আছে বাবা মাকে বই কেনার কথা না বলে মোবাইল কিনে দিতে বলছে। মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে সারাদিন রাত অশ্লীল ভিডিও, গান, সিনেমা, ছবি ইত্যাদি দেখছে। এর ফলে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারে তাদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অনেক সুবিধা রয়েছে। আজকাল নিত্য নতুন প্রয়োজনের জন্য মোবাইল ফোন অন্যতম। মোবাইল ফোন একটি অন্যতম মাধ্যম। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তরগুলো পেয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই। এখন অনলাইনের মাধ্যমেও ক্লাস করা যায়। মোবাইল এর মাধ্যমে পড়াশোনার বিষয়ে নতুন নতুন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
মোবাইল ফোন আমাদের চলার পথ সহজ করে দিয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সকল এসএসসি ও এইচএসসি সহ বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল দেখা যায়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোন পড়া ছবি তুলে দেওয়া যায় খুব সহজেই। ছাত্র-ছাত্রীরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে খুব সহজে। একজন আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। ক্লাসের সবাই মিলে একসাথে ক্লাস করা যায় খুব সহজে।
মোবাইল ফোনের ব্যবহারে পড়াশোনার ক্ষতি
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে পড়াশোনায় অনেক ভাবে ক্ষতি করে চলেছে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা বাদে ফোনের ভিতর নেশায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এখনকার জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা বাদে টিকটক, লাইকি এ ভিডিওর মত অনেক পেশাতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোন থেকে নির্গত বেতার তরঙ্গ কে ক্যান্সার সৃষ্টি কারী বলে গণনা করা হয়ে থাকে।
বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা রাতে তাদের মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে ঘুমাই বলে নিজা বঙ্গ হয়। স্মার্টফোনে আসো টি মাদাকাসক্তির মতোই ক্ষতিকর। দুটোই অনেক ক্ষতি করে থাকে। মোবাইল ফোনের এই ব্যবহার চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরের ভেতরে শিক্ষার্থীরা বই পড়তে ভুলে যাবে। পড়াশোনার ক্ষতির দিক থেকে বাঁচতে হলে মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে দিতে হবে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের পাঁচটি ক্ষতিকর দিক
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করা যাবে না। এর ফলে অনেক ক্ষতি হতে পারে। মোবাইলের মাত্রা ভিত্তিক ব্যবহারের ফলে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি দেখা দিতে পারে। যেমন,
১. ঘাড় ব্যথা : দীর্ঘ সময় মাথা ঝুকিয়ে মোবাইলের বুঁদ হয়ে থাকার কারণে দেখা দিতে পারে ঘাড় ব্যথার সমস্যা। অত্যাধিক গেম আসক্তি, স্কিনের দিকে তাকিয়ে ভিডিও দেখা ইত্যাদির কারণে ঘাড় ব্যথা হয়ে থাকে।
২. চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া : দীর্ঘ সময় চোখের খুব কাছে রেখে মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীন হওযায় এক ধরনের জিনগত সমস্যা দেখা দেয়। মোবাইল ফোনের মাত্রা অতিরিক্ত ব্যবহার দৃষ্টিহীনতার কারণ হতে পারে।
৩. কানে কম শোনা : মোবাইলে দীর্ঘ ওক্ষণ কথা বলা, উচ্চ আওয়াজে গান শোনা এবং কানে হেডফোন গুঁজে রাখার মাধ্যমে দেখা দিতে পারে প্রবন শক্তি কমে হওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা।
৪. শুক্রাণু কমে যাওয়া : মোবাইল ফোন থেকে নির্গত হওয়া হাই ফ্রিকোয়েলির ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক শরীরের বিভিন্ন কোষ ও পুরুষের প্রজনন তন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে।
৫. মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া : দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে অনেক সময় ব্যবহারকারীর মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। একই সাথে অস্থিরতা ও অমনোযোগিতা বৃদ্ধি পায়।
ছোট বাচ্চাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক
ছোট বাচ্চাদের মোবাইল ফোন অনেক ধরনের ক্ষতি করে থাকে। ১-৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের চোখের সমস্যা গত ৫ বছরের ৩ - ৪ গুণ বেড়েছে বলে জানালো জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান। এর অন্যতম কারণ হিসেবে তারা বলেছে এই বয়সে শিশুদের অধিক মাত্রায় স্মার্টফোন ব্যবহার। অতিরিক্ত ফোন দেখলে বাচ্চাদের ব্রেনের সমস্যা হতে পারে।
চোখের সমস্যা ও হতে পারে। মাথা ব্যাথা করতে পারে, চোখ ব্যথা করতে পারে। এবং তাদের চোখ ড্রাই হয়ে যেতে পারে। শুধু চোখের সমস্যা নয় হচ্ছে বিকাশ জনিত নানা সমস্যা। এই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে দেরিতে কথা বলা ছাড়াও বাচ্চাদের মাঝে বাঁচে অনেক সমস্যা।
স্কিনে নয় এই সময় তারা কথা বলা ও শোনার দক্ষতা, দৌড়ানো, কোন কিছু বেয়ে উপরে ওঠার মত শারীরিক ক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা করবে ওরা। মোবাইল ফোন বাচ্চাদের একটি অত্যান্ত ক্ষতিকর দিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোনের প্রভাব
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোন আমাদের অনেক ভাবে প্রভাবিত করে। মোবাইল ফোন যেটি আপনার খুব কঠিন কাজগুলোকে অনেক সহজ করে দিচ্ছে। এবং খুব দ্রুত কাজগুলো করতে সাহায্য করছে। মোবাইল ফোন আমাদের অনেক ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। অনেক ভালো কাজে লাগে। আবার অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি। মোবাইলের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। মোবাইল ফোন ড্রাগসের মত কাজ করছে তাদের কাছে।
মোবাইল ফোন আমাদের প্রিয় মানুষের সাথে কন্টাক্ট করে দেয়। মোবাইলের অনেক অ্যাপ যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লেগে থাকে। ইন্টারনেট আমাদের অনেক অজানা তথ্য পেতে সাহায্য করে। মোবাইল ফোন আপনার পড়াশোনার ওপর প্রভাব ফেলে। মোবাইল ফোন যখন আপনার দরকার শুধুমাত্র তখনই ব্যবহার করবেন। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনে অনেক ক্ষতিকর কারণ হতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপকারিতা ও উপকারিতা নিয়ে আপনাদের সাথে অনেক কথা বলেছি। মোবাইল ফোনে ব্যবহারের সম্পর্কে আগে থেকে সচেতন হওয়া উচিত। ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের ব্যবহার গুরুতর প্রভাব ফেলে। আশাকরি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন। এমন আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।
অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।
comment url