তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করবো। সম্পূর্ণ পোস্টটি 

তুলসী-পাতার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

পড়তে পারলে জানতে পারবেন তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা ও অপকারিতা। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা দিনগুলো কি?

পোস্ট সূচিপত্র : তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

তুলসী পাতার উপকারিতা 

প্রাচীনকাল থেকে ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার হচ্ছে তুলসী পাতা। ঠান্ডা জনিত রোগ সমাধানের যার গুনের শেষ নেই। গবেষণা বলছে হৃদপিন্ড কে সুস্থ রাখতে কাজ করে তুলসী পাতার ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে এন্টি ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান রক্ত পরিষ্কার রাখতে বেশ কার্যকরী তুলসী পাতা। তুলসীকে বলা হয় সকল রোগের ওষুধ। 

বিশেষ করে যদি কাশি এবং গলা ব্যথা বিষয়ে কাজ করে তুলছি। তুলসী পাতায় রয়েছে এজমা, ফুসফুসের সমস্যা সহ অসাধারণ রোগ প্রতিরোধ করা ক্ষমতা। তুলসীতে ইমিউনো মডিউলেটোরি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। যার ফলে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে মানুষের ইমিউনো সিস্টেম শক্তিশালী হয়।

আরো পড়ুন : ফলমূল খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন 


এবং শরীরের রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। তুলসী পাতাতে আছে রেডিও প্রটেকটিভ উপাদান যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। এতে আরো আছে পাইটো কেমিক্যাল যেমন রোজমালিন এসিড, মাইরেটিনাল এবং এপি জেনিং এসব উপাদান ক্যান্সারের মতো মরন ঘাতি রোগের বিরুদ্ধে কাজে কার্যকরী।

তুলসী পাতা খালি পেটে খেলে কি হয়

তুলসীর বৈজ্ঞানিক নাম হল অসিমাম সেন্টাম। তুলশিকে পবিত্র গাছ ও বলা হয়। তুলসী শব্দের অর্থ হলো যার তুলনা নেই। তুলসী পাতার মধ্যে থাকা শক্তিশালী এন্ডঅক্সিডেন্ট ভিটামিন সি এবং এন্টিভাইরাল ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী যা ঋতু কালীন জ্বর সর্দি কাশি এবং দাঁতে পোকা ও মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা দূর করে। তুলসী পাতার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক ক্যাডাপটোজন উপাদান মাইগ্রেন ও মাথাব্যথা দূর করে। 

তুলসী পাতা হল প্রাকৃতিক রিমিনাশক। নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে গুড়া কৃমি থেকে মুক্তি পাবেন। তুলসী পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্ট ইনফ্লেমেটরি এবং প্রাকৃতিক এন্টাসিড গুণাবলী গ্যাস্ট্রিক এবং আলসারের সমস্যা প্রতিরোধ করে। তুলসী পাতার মধ্যে থাকা জিংক এবং কপার থাইরয়েড ও সুগারের সমস্যা প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ করে। তুলসী পাতার মধ্যে থাকা এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণাবলী শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

তুলসী পাতা ও মধু খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা 

আপনি কি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে চান? তাহলে আজ থেকেই তুলসী পাতা ও মধুর মিশ্রণ খেতে পারেন। কারণ তুলসী ও মধুর মিশ্রণে রয়েছে বহু ঔষধি গুনাগুন। একটি কাপের মধ্যেও চার থেকে পাঁচটি তুলসির পাতা নিন‌। এরপর ওই কাপের নিন এক টেবিল চামচ মধু। একটি চামচ দিয়ে তৈরি করুন মিশ্রণ। প্রতিদিন সকালে নাস্তা করার আগে এটি পান করুন আর পেয়ে যান অনেকগুলি স্বাস্থ্য উপকারিতা। 

তুলসী-পাতার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

তুলসী পাতা ও মধুর মিশ্রণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ঠান্ডা ও সর্দি-কাশি কমায় তুলসী ও মধুর মিশ্রণ পান করলে। এই মিশ্রণটি শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা কমাতে কাজ করে। তাই নিয়মিত তুলসীর চা পান করলে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন দ্রুত। তুলসী ও মধুর এন্টি সেপটিক উপাদান ত্বকের এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে। তুলসী পাতা ও মধুর এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ত্বকের বয়স বৃদ্ধি কমিয়ে দেয়। তুলসী ও মধুর মিশ্রণে কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করে।

তুলসীর ক্ষতিকর দিক

তুলসীর মূল উপাদান হলো ইউজিনল। আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকারক। এর প্রভাবে অত্যাধিক শ্বাস ক্রিয়া কফ ও প্রসাবের সঙ্গে নির্গত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্কার মতে এসিটামিনো ফোন সেবন কারি রোগীরা যেটা গলটাথিওল এর মাত্রা কমায়। তারা তুলসী ব্যবহার করলে দুটি মিলে লিভারের স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। গর্ভবতী মহিলা এবং গর্ভস্থ ভূরুনের জন্য নিরাপত্তা নয়। মেয়ে লোকের রজ চক্রের সময় তুলসী সেবন থেকে বিরত থাকা উচিত। 

তুলসী সেবনে রক্তের ঘনত্ব কমে যায়। তাই যারা রক্তের ঘনত্ব কমানোর ওষুধ খাচ্ছেন তাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটি সেবন করা উচিত নয়। ২০০০ সালের একটি সমীক্ষায় জানিয়েছেন তুলসীর অতিরিক্ত ব্যবহার পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তুলসী গাছের প্রধান উপাদান হলো হেপাটোটব্রিক। তাই এটির অধিক মাত্রা লিভারের ক্ষতি করতে পারে এবং শ্বাসকার্যের সমস্যা, মূল ও কফের সঙ্গে রক্ত নির্গত হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

তুলসী পাতা দিয়ে ফেসপ্যাক

আপনি যদি ত্বক ও সংক্রান্ত অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে চান তাহলে অবশ্যই তুলসী পাতা দিয়ে তৈরি এই ফেসপ্যাক গুলো ব্যবহার করতে পারেন। তো লাখ তো ত্বক ও ব্রণ এমন কিছু সমাধান সমস্যা যা আমরা প্রত্যকে সম্মুখীন হয়ে থাকি। তুলসী পাতার ফেসপ্যাক কিভাবে বানাবেন? তুলসী পাতা এক কাপ, নিমপাতা এক কাপ, লবঙ্গ তেল এক চামচ। 

তুলসী এবং নিমপাতা ধুয়ে একটি বেলেন্ডার দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টের ভেতরে লবঙ্গ তেল যোগ করুন। তারপরে সবকিছু ভালোভাবে মিশিয়ে প্রস্তুত করুন। মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্যবহার করুন। এরপর ফেসপ্যাক একটি মুখে ভালোভাবে লাগান। ৩০ মিনিট এর মত ফেসপ্যাকটি লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পর মুখটি ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।

তুলসী পাতা দিয়ে চুলের যত্ন 

নিষ্পাপ ও শুষ্ক চুল ফিকে করে দেয় সমস্ত আয়োজন। আবহাওয়া রোধের প্রাবল্য ধুলোবালি চুলে সতেজ ভাবকে নষ্ট করে দেয়। চুলের নানান রকম সমস্যার মাঝে অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যাটি এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। শুধু নারিকেল তেল চুল পড়ার সমস্যা ও স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট নয়। নারিকেল তেলের সাথে প্রয়োজন হয় বাড়তি কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের আর তাই এসবের জন্য চুলের যত্নে ভেষজ উপাদান ব্যবহার করতে পারেন নিয়মিত।

তুলসী-পাতার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

খুশকি ও চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা ভুগলে তুলসি তেল ও হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন‌। সপ্তাহে কয়েক দিন। ভিটামিন এ, সি, কে এবং ই পাওয়া যায় তুলসী থেকে। এছাড়া এতে থাকা আইরন, প্রোটিন ও চুলের যত্নে অনন্য। নারিকেল তেল কয়েকটি তুলসী পাতা ফেলে ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে লাগান। এক ঘন্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে কি হয়

তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে নেই। তুলসী পাতায় মার্কারি নামক এক ধরনের জৈব থাকে। যা দাঁতের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া উচিত নয়। তুলসী পাতা অন্য উপায় খেলেও কাঁচা একেবারে চিবিয়ে খাওয়া যাবে না। এতে হতে পারে মারাত্মক বিপদ। তুলসী পাতায় প্রচুর পরিমাণে মার্কারি এবং আয়রন থাকে। চিবিয়ে খেলে সরাসরি তা আপনার মুখের ভেতরের ত্বকে প্রভাব ফেলছে। 

এতে হতে পারে দাঁতের সমস্যা। আপনার মুখের আলসার বা ক্ষত সারাতে সহায়তা করলেও দাঁত ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। তাই তুলসীর রস করে কিংবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খান। তুলসী পাতা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সাধারণ ফ্লু থেকেও রক্ষা করবে। তাই প্রতিদিনের সঙ্গে করতে পারেন তুলসী পাতা।

তুলসী চা এর উপকারিতা

ঔষধি গুনের জন্য ভারত মহাদেশের সামাজ্জিত তুলসী পাতা। আয়ুর্বেদিক বিভিন্ন রোগের প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করা হয় তুলসী পাতা। তুলসীতে আছে এমন কিছু অ্যান্টি এক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজে আসে। শুকনো টাটকা এবং গুরু সব ধরনের তুলসীতে আছে পুষ্টি উপাদান। দৈনিক তুলসী চা পান করাটা উপকারিতা। ঠান্ডা, সর্দি কাশি থেকে মুক্তি দেয় তুলসি চা। 

ফুসফুসের সমস্যা দূর করে তুলসি চা। এছাড়াও মুখে কফ জমা বের করে দেয় তুলসি চা। তুলসী যায় শরীরের স্টেজ কমায়। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে করে তুলসী চা। দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে তুলসী চা এবং আর্থাইটিস উপশম করে। গরম পানিতে দুই থেকে তিনটি তুলসীপাতা নিয়ে ফুটিয়ে নিন। পানির রং ও গন্ধ পরিবর্তন হয়ে এলে আজ বন্ধ করে দুই থেকে তিন মিনিট রেখে চা ছেঁকে অল্প করে লেবুর রস ও মধু দিয়ে পান করলে অনেক উপকার পাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অল টপিক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। মেনে কমেন্ট করুন।

comment url